
রাজর্ষি পি দাস
বরফের বালিশ
কোনও কথা বলি না কষ্টে থাকলে,
জানতে হলে নিজের কষ্ট
নিজেকে চিনতে পারি।
নিজেকে চেনা হয়নি
তাই বোঝাতে পারি না কেন মন থেকে ডানা খসে গেলে
রক্তের ভর কমে যায়
কেন আগুন হওয়া সত্ত্বেও বরফের কথা বলি,
বলি আমার বালিশ বরফের বালিশ বরফ ছাড়া আমার ঘুম হয় না।
আসলে কী হলে আমার ভালো বুঝতে গেলে
আর কোনও ভালো কথা শেষ মনে হয় না,
যেন তারপর আর কোনও স্টেশন নেই
চিতায় শুয়ে আছি; উড়ে যাচ্ছি…
খরখরে ধুলোতে চারদিক আবছা দিগন্ত।
নেমে পড়তে হবে ধীরে সুস্থে একটা তুলসি গাছ লাগাবার জন্য
অবৈধ
ঠিক এটাই বলেছিলাম কি
উড়ে যাব টানটান মহাকাশের দিকে
অনন্তের দিকে চলে যাব
পাতলা হাওয়াই চপ্পল পরে হুহু…
নীল সাহসের দিকে সবাইকে কাঁচকলা দেখিয়ে
হলুদ গিটার বাজাতে বাজাতে
মাঝপথে কৈশোরের ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো
আমি শেষ বস্ত্র পরিত্যাগ করলে
হাফপ্যান্টের কোন কোন বোতাম
উল্কা হয়ে অতীত পুড়িয়ে ফেলে জানতে চাইব না—
ভয় হয় আবার জন্মালে যে নারী জন্মায় নি
তার সন্তান হব নাকি প্রেমিক
ভ্রমণ
কায়া নিয়ে পড়ে থাকি
শবাসনে শান্তির ভাগ কাউকে দেব না।
মৃতবৎ পড়ে থাকার চর্চায়
শরীর শরীর ছেড়ে দেয়
নিরাকার শরীরের জন্য
আর, পাহাড় পথের নিঃসঙ্গতা নিয়ে
সন্ধ্যা নামল!
চাঁদ এখানেও আছে বিশেষ ঠান্ডা চাঁদ
হাতঘন্টায় বেজে উঠল তুমুল পিতল আলোড়ন
সপ্তপ্রদীপ দাউদাউ যেন হিমালয়ী দায়
শিবেশিব চারিদিক।
গর্ভপাতে আমার হস্তাক্ষর একটা শিব অথবা দুর্গা কম করে দিয়েছিল…
শীত জানি না বরফ জানি না
নিজস্ব পালক আছে নিজস্ব উষ্ণতা নিজস্ব শরীর
বিশ্বাস করি যেভাবেই বাঁচি না কেন
স্মৃতিরা গরম- মন্দাকিনী-চায়ের মতো রক্তে হাত রাখে।
রাতের আকাশে এখন পূর্বপুরুষদের আসর
শিবের এখন অনেক কাজ
ঘুমিয়ে পড়ি…
বসবাস
একপাল রঙিন বেলুন নিয়ে বড় হলাম হঠাৎ
হাঁটছি কোমর দোলাতে দোলাতে
আমার কাছে ১৬-টা বড় বড় বেলুন
ফস্কে গেলে আমি একা যেকোনও মুহূর্তে
বিকেল সন্ধ্যা রাত্রি… যাই হোক না কেন
ছেড়ে দিলেই আমি একা।
জানি এখানে
এই মুহূর্তে দুপাশেই স্নাইপারের ভিড়
অন্ততঃ
৬-টা হাইরাইজের ছাদে জানলায় ওরা সাষ্টাঙ্গে—–
টেলিস্কোপে চোখ
আমার পাড়ার ঠিকানা ওরা পেয়ে গেছে
মাথায় ফোকাস করতে পারছে না আজ ৭ দিন।
তবে ওরা বেলুন ফাটাতে আসেনি
আমি হাঁটছি…
পুজোর ছুটি
হাইরাস্তায় পড়ে আছি
দুটো ট্রাক চলে গেছে
খুলি: কিডনি ছাড়া সব ফেটে গেছে আমি চিৎ।
প্রবল বাতাসলুটের মধ্যে হৈহৈ কচিহাত সব শূন্যে
একটাও বাতাসা পেলাম না আবার খিটকেল পুরোহিত—
ভাঙা ভাঙা ছড়া মনে করতে পারছি না
শনি না সত্যনারায়ণ।
আমার টায়ারকাটা বুড়োআঙুল আর তর্জনীর ফাঁক দিয়ে বালের চাঁদ
ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশের পর ক্লাশ
পলিগ্যামি চাঁদ
সবসময় সতী-সতী
নেমে আসছে চ্যাপটা আমির দিকে
যেন আমি ছাড়া কেউ নেই ওর এত ভালোবাসা।
পড়ে আছি এদিক ওদিক
একটা শরতের ব্যাঙ হোঁচট খেল
খেয়ে আবার ফিরে এল আবার লাফাল—ফিরে আবার লাফাল
যেন প্রাইমারি স্কুলের শাস্তি বসে বসে লাফাও, ব্যাঙটা আবার
লাফাল
বাতাসায় বাতাসা সাথে কুল কামড় দিলাম
শনি না সত্যনারায়ণ ছড়া কেটে-কেটে যাচ্ছে…
এখন আবার কোন আজান!
কিডনির নীচে পিছলে যাচ্ছে গরমগরম, আরাম লাগছে অল্পসল্প
একটা নাটবল্টু বোধহয়।
দূরে একটা বাইকের হেডলাইট
বোধনের ঢাকে কাঠি
বাতাস চমকে, গাছেরা একলাফে সেজে উঠল
ঢাক এখন ডানকাঠির আওতায়— মা বল্ল যা তোর ঢাকি এসে গেছে।
প্রতিটা বাড়িতে
অন্দরে বাহিরে শাসন খুলে যাচ্ছে কাশফুলের মত
হাফপ্যান্ট সরলতায় বড়দের ঈর্ষা হচ্ছে
প্রথমেই পাঁচ পয়সার গুড়ের ক্যাডবেরি
আমার প্রথম প্রিয় মানুষ গান্ধি ঢাকি।
আমি দৌড়চ্ছি কোনদিকে জানি না ভালো লাগছে ভীষণ
হাওয়া গিলতে গিলতে—ঘিলু বলল বাংলা খেয়েছিলাম।
হাইরাস্তার চ্যাটচ্যাটে প্রতিফলনে বিকৃত শুক্লপক্ষ
ফোনটা বেজে যাচ্ছে
লাল পিঁপড়ে গুটিগুটি এগিয়ে আসছে
রিং টোনটা আর বদলানো হল না
ব্যাঙটা আবার লাফাল হাওয়াতে বাতাসার গন্ধ
ওটা বাইক ছিল না আরেকটা ট্রাক চলে গেল।