
প্রণব দে সরকার
শব্দতালাশ
১
শামুক হাতে তুলে নিই
ব্যাগে, টিয়াপাখি অবিকল আমার মতো … যমজ
অথচ না বলা কতো কথা
কেউ কেউ শোনে কানে আসে
অনেকে শুনতে পায় না আসলে
চোখেও দেখে না
দুপুরের সানগ্লাস কখন যে নিয়ম হয়ে ওঠে
২
আমিই সভ্যতার ধারক বাহক ঘাতক
আমাকে শহরের চৌমাথায়
লটকানো হোক
কারণ আমিই নির্বিচারে হেঁকেছি
প্রযুক্তি মানেই সভ্য আমরা…
আর প্রযুক্তি মানেই ঈশ্বর….
তাই, নির্বিচারে গাছ কেটেছি
এসফল্ট
আমার পায়ে, কাদার টুঁ শব্দটি জাগায় না…
একে একে শালিজমি জলজ কিছু উপত্যকা
ঢেকে ফেলবে …. সভ্যতার নামে ভোট দেবো
দল খুঁজবো ধান্দা কিছু হবে
সবাই করে কম্মে খাচ্ছে….
এটাই যুগ পড়েছে বলে খৈনি ঝাড়বো
হাতের তালুতে সারাৎসার…
তুমি কে হে চৌমাথায়… চেল্লামেল্লি জুড়েছো………
—ঘোর কলি
৩
আধো কাঁপা কাঁপা হাতে গ্লাসে জল ঢালি…মদে, নির্ভার ঝরনার জল মেশাই। এই জল নির্ভার ঝরনা… নাকি জর্ডন নদীর পবিত্রতা… এই নিয়ে স্ববিরোধ হলে
ভাবি আমি নাস্তিক অথবা আস্তিকের ল্যাবিরিন্থ
আমাকে ছুঁয়ে থাকে, আমি ছুঁয়ে থাকি
গোপন জ্যোৎস্না !
আপেল অখাদ্য, ডাঁসা পেয়ারায় কামড় দিই
ছুঁড়ে দিই প্রণাম
অজ্ঞেয়…
৪
সাজানো সমুদ্রের নুন চোখে লাগলে
সাইকেল, উঁচুনিচু রাস্তায় লাফাতো…
পালিয়ে আসতাম পেরিয়ে যেতাম এসফ্যল্ট রাস্তা যা বিভক্ত …
সভ্যতা কি আমার মতোন পলায়নপর হয়েছে…
এসকেপিস্ট কোনদিন
কোন গান …
ছুঁয়ে গেছে !!!
৫
আমি জেব্রা অদ্ভুত
সাদাকালো লেবেলক্রসিং
গাড়ী চলে যায় সভ্যতা
ট্রাফিকে খানিক থমকায় এদিক ওদিক
তারপর টিকিট কাটে চিড়িয়াখানার
নিরন্ন কিছু মানুষ ওপারে প্রায়
উন্নয়ন নিয়ে ভাবছে
এপিটাফ
১.
কফি কাপে কিছু নীল
তলানি
স্বপ্নের টুকরো পড়ে
থাকলো
আগুনে গোটা শরীর পুড়বে
আমার মরে যাবার পরে
ভাবলেই শিউরে উঠতাম শৈশব থেকেই …
তারপর মনে পড়তো
কবরে — দিলেই কি দমবন্ধ হয়ে মরে যেতাম না !!!
মরার আগেই হাঁফিয়ে উঠি ধর্মের ঠেলায়…
একমাত্র গান্ডুরা বোঝেনা
বেঁচে থাকা ধর্মের অধিক কিছু
আবারও বৃষ্টি পড়ছে…
২.
অহেতুক বেঁচে থাকার জন্য
আমার
গোপন সিঁড়ি দায়ী
যে সিঁড়ি নিজেই বানিয়েছি, ভালোবাসা কি
না বুঝে ছুঁয়ে ফেলেছি
ঈশ্বরের আড়াল….
আর আমার ফারাক , বিকার
এই কথোপকথন নেহাত অহেতুক
কোন তৎসম শব্দের দূরত্বে যেন বেড়ে যাওয়া
আমার অনেক আগেই মরে যাওয়া উচিৎ ছিলো