
শর্মী পাণ্ডে
শৈশবখানা ২০২০
ছোটোবেলায় দিদিকে দেখতাম জানলার গ্রীল ধরে একা একা কাঁদতে
শুনেছিলাম একে নাকি মেলাঙ্কোলিয়া বলে।
আজকাল আমি প্রায়ই রাতের বারান্দায় একা একা আকাশের দিকে চেয়ে বসে থাকি চুপচাপ
এভাবে অনেকদিন কেটে গেলে একদিন আকাশ ঝমঝমিয়ে কেঁদে ওঠে
আমি ছোটোবেলায় জানতাম না আমার ভেতর এতো মেঘমল্লার জমানো আছে।
২
আমাদের বেসিনের কলগুলোর তার কেটে গ্যাছে। সমানে জল পড়ে চলে।
ঠিক যেভাবে পুষ্পদি মেয়ে মরে যাবার পর কুঁজো পিঠ দুলিয়ে একনাগাড়ে কেঁদে যেতো সারাদিন।
আর আমাদের শ্যাওলা ধরা পাঁচিলে বসে থাকা কাক, উঠোনের কল বা নর্দমার পাশে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আরশোলা অবাক হয়ে চেয়ে থাকতো।
ডিপ্রেশন শব্দটার মানে আমি তখনও জানতাম না, মনে হতো যাবতীয় মনখারাপ সারিয়ে দেবার ম্যাজিক স্কুলের বাইরে বসে থাকা হজমিওলার জানা আছে।
নাভিযাত্রা ১
সাদা পুরনো পরসিলিনের বেসিনের মতো পড়ে আছি। য্যানো অব্যবহৃত শীতলতা জুড়ে শুয়ে আছে বিছানাটা আর আমি তার ওপর লেগে থাকা একগুঁয়ে একটা দাগ, রোজ ফ্যাকাসে হচ্ছি মিলিয়ে না যাবার অহংকারে। মাথার উপর থেকে ধোঁয়া কুন্ডলী এঁকে উড়ে যাচ্ছে, সিলিং এর থেমে থাকা গাছে তারা মেঘ হ’য়ে বসে। একদিন, উষ্ণতা ফিরে এলে তালু ফেটে নাভিযাত্রা শুরু হবে আমাদের।