
তুষ্টি ভট্টাচার্য
কাঠের প্যাঁচা
৪০
পূর্ণচন্দ্রের মহিমা নিয়ে জন্মেছিলেন বুদ্ধ
জ্যোতিপ্রিয় তিনি, অন্ধকার পাখিটিকে দেখেননি
স্মিত হাসি চুঁইয়ে পড়া শান্তির বাণী শোনেনি কাঠপ্যাঁচা।
চাঁদের ঔজ্জ্বল্য আজ চাপা পড়েছে বজ্রনির্ঘোষ মেঘের নিচে
পেঁজা তুলোর মতো ফুলেফেঁপে ওঠা সাদা মেঘের নিচে বিদ্যুতের ঝলক-
এমন দৃশ্যের সম্মুখীন হল আজ কাঠপ্যাঁচা।
নিমীলিত নয়ন মেলে দেখেছেন বুদ্ধও।
এ এক অস্তমিত আলো—অন্ধকারকে পিঠে নিয়ে যাত্রা করেছে।
চাঁদের উল্টোদিকে চরকা কাটা বুড়ি নিদ্রারত হায়…
কে দেবে আজ বুড়ির চুলের মতো মেঘ?
কে দেবে মেঘের মতো রাত কাঠপ্যাঁচাকে?
ঘোর কালো এক নিশ্চিন্ত রাতের আশ্রয় চাই তার-
চাই, কালো চাপ চাপ রক্তের মতো দিন……
৪১
ইথার থেকে নেমে এলো মেঘ, কিছু হাতি, ঘোড়া আর ভল্লুক
মাদারীর হাতে ডুগডুগি বেজে উঠেছে তড়িৎগতিতে
হাতির শুঁড় বেয়ে উঠে পড়েছে দিলীপ কুমার
ঘোড়ার পিঠে বৈজয়ন্তীমালা-
মাদারীর সাথে ভাব জমিয়েছে ভালুক…
এইসব কল্পিত দৃশ্যের থেকে দূরে থাকে কাঠপ্যাঁচা
রাতজাগা চোখে তার আলো হয়ে ফোটে তারামণ্ডলী
অকৃতদার সে, বীজহীন, বীর্যহীন, অকল্পনীয় কায়া
সে কি জানে দৃশ্যান্তর, সে কি জানে জন্মরহস্য!
আশ্রয়হীন যারা, প্রশ্রয় পেয়েছে যারা,
দূর থেকে উভয়েই রয়ে গেছে ক্ষীণকায়া সেতুর মতো
দড়ি ধরে পার হতে হবে ঝুলে ঝুলে…
যেহেতু আজও কাঠপ্যাঁচা উড়তে শেখেনি
যেহেতু আজও দূর থেকে উড়ে আসে অলীক ছায়া…