
দেবাঞ্জন দাস
করোনার দিনগুলোতে
১।
বৃষ্টি এলো ভেজা রাস্তায় কুকুরের মতো
মায়া জুড়ে জুড়ে যেমন আমাদের জমি-জিরেত
পটল ক্ষেত থেকে সন্ধ্যার সাপ
ঘরে ফিরবে এখনি
কে জানে হয়ত দেখা যাবে
খেলার গাড়ি নিয়ে রোদে পোড়া বুড়োটা
মেপে যাচ্ছে কাঠায় বর্গ ফুট কত হল
শুধু বাড়ি ফেরতা বলদগুলো ডাকছে না একবারও…
ফসল তো প্রেয়সী ছিল না কখনও
তবু তার গন্ধ শুঁকে শুঁকে
কদমের সাঙা হয়
ফুল ফোটে বাড়িতে
পুকুরের হাওয়া জলকে আরাম দিচ্ছে
খেলছে তিরতির…
মাঠের সঙ্গমে চাঁদকে ডুবতে দেখি
দেখি বুড়োটা এখনও মেপে যাচ্ছে কাঠায় কত বর্গ ফুট হল
বাড়ি ফেরতা বলদগুলো তবুও ডাকছে না একবারও…
২।
উবু হয়ে বসেছে দূরত্ব
শুধু রাস্তা আর আলের আকাশ উবু নয়
জাগতিক সে দূরত্ব মাপায় হুল্লোড় হয় খুব
ভিয়েনে রসগোল্লা চাপে
সূর্য নেমে আসে পৃথিবীর একান্ত কাছে
আমরা হাসতে হাসতে দেখি
বিঘা দূরত্বে
সড়কিতে ফাটা মাথায়
বর্গার ঘাস হয়েছে দু’গাছা
তার সবুজটুকু কেবল সবুজ নয়…
বৃষ্টি হলে ভোর ছোট হয়ে আসে
দেখার অলৌকিক কানে চলে যায়
ফোনের দূরত্ব মাপতে আসে চেইন ম্যান…
দরজা খোলো, হেক্টর ঘুমিয়ে পড়লে যে…
কোথাও অনুশোচনা নেই।
ঠাণ্ডা সবুজ থেকে
পোকারা উড়ে এসে জিজ্ঞেস করে—নাম, সাকিন, তহশিল…
আমাদের লৌকিকতা সড়কির রক্ত মোছে
“খোকা! ভালো আছো? বাবা কেমন আছে?”
বিস্তৃত ধান্যক্ষেত্রে দু’দণ্ডের চাঁদ যেন
স্থায়ী হয়েছে
প্যাঁচা ডাকছে নৈর্ঋতের নিম কুহকে
মাঠ থেকে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরছে
অমল ও ধবল…
তুমি চাইলে, এই কান্নার মাঝে আমি সত্যিই দরজা খুলতাম…
লুই বুনুয়েল আমাদেরই পৃথিবীতে থাকতেন, ছবি করেছিলেন কয়েকটি…